রোগ নির্ণয়ে টাচস্ক্রিন ফোনে থুতু ।

একদল গবেষক মনে করছেন আমাদের প্রিয় টাচফোন এবং ট্যাবগুলোতে যে ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন রয়েছে তার মাধ্যমে আমাদের মুখের ভেতর যে সব রোগ-জীবাণু রয়েছে সেগুলো নির্ণয় করা সম্ভব। কোরিয়া অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির হিউয়ুন গিয়ু পার্ক এবং বিয়ং ইয়ন উন-এর মতে টাচস্ক্রিন রোগ নির্ণয় ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা যেতে পারে, যেখানে ল্যাবের পরিবর্তে ব্যবহার করা হবে মোবাইল ফোনকে। পার্ক বলেছেন, এক ফোঁটা তরল পদার্থকে টাচস্ক্রিনের ওপর ফেলা হবে এবং ফোনে থাকা একটি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সেটাকে অ্যানালাইসিস করা হবে, আপনি কী রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এই দুই গবেষক টাচস্ক্রিন হাতের আঙুল বোঝার জন্য যে বৈদ্যুতিক চার্জ সংরক্ষণ করে সেটাকে ব্যবহার করতে চাইছেন- যার নাম ক্যাপাসিট্যান্স। একটি ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিনে যে সেনসিটিভিটি দেয়া থাকে তা আসলে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি।
পার্কার বলেন, ‘যেহেতু এই টাচস্ক্রিনগুলো স্বল্প ক্যাপাসিট্যান্স পরিবর্তনও অনুধাবন করতে পারে আর তাই আমরা ভাবলাম একে রোগ নির্ণয়ের অত্যন্ত সংবেদনশীল শনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম বায়োমার্কার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।’ তারা তাদের এই ধারণাকে পরীক্ষা করার জন্য শরণাপন্ন হলেন আইফোনের কাছে! তারা প্রথমে ক্ল্যামিডিয়া রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ’র তিনটি ভিন্ন কনসেন্ট্রেশন সল্যুশন গ্রহণ করেন এবং সেই সল্যুশনের একফোঁটা আইফোনের মাল্টিটাচ ডিসপ্লের ওপর ফেলেন। তারা দেখেন মাত্র ১০ মাইক্রোলাইট ড্রপলেট (ফোঁটা) স্ক্রিনের ক্রিসক্রস অবস্থায় থাকা টাচ-সেন্সিং ইলেক্ট্রোডগুলো প্রতিটি কনসেন্ট্রেশনের ফলে যে আলাদা ক্যাপাসিট্যান্সের সৃষ্টি হয়েছে তা শনাক্ত করতে পেরেছে।
প্রযুক্তিটি এখনও গবেষণা পর্যায়ে রয়েছে আর তাই এ মুহূর্তে এখনও রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না তবে পার্কের মতে ভিন্ন ভিন্ন কনসেন্ট্রেশনগুলোকে চিনতে পারাকে প্রথম পদক্ষেপ বলে তিনি মনে করছেন।
তাহলে এখন থেকে আপনি যদি কোনো রোগে আক্রান্ত হন তাহলে আর কষ্ট করে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে একগাদা টাকা নষ্ট করে ভুল প্রতিবেদন নেয়ার চাইতে থুতু ফেলুন আপনার মোবাইলফোনের ওপর আর নির্ণয় করুন কি রোগে আক্রান্ত আপনি!
গ্রন্থনা : আহসান হাবিব

Leave a comment